সেরা ভালোবাসার ছোট গল্প(শেষ পাতা)

কল্পকথার-রাজ্য
0



সেরা ভালোবাসার ছোট গল্প(শেষ পাতা)                                                   

কিছুক্ষন আগে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে | আমি প্রতিদিনের মতো আজও আমার বাসা থেকে বের হয়ে চায়ের দোকানের দিক যাচ্ছিলাম।হালকা হালকা বাতাস বইছিল হঠাৎ তাকাতেই দেখি সামনের বাসার বেলকনিতে বসে একটা মেয়ে ডাইরি হাতে নিয়ে কি জানো লিখছে।এর আগে কখনো তাকে দেখি নি আমাদের মহল্লায়।সামনে এগোতেই দেখি করিম চাচা আসছে তখন তাকে জিজ্ঞেস করলাম চাচা আমার সামনের বাসায় যে একটা মেয়ে কে দেখলাম ডাইরি হাতে নিয়ে বসে আসে তাকে তো আগে দেখি নি আমাদের মহল্লায়।তখন তিনি বললেন মেয়েটা আজ এ এসেছে আমাদের মহল্লায়।

তবে মেয়েটা খুব ভালো কিন্তু কথা বলতে পারে নাহ মানে বোবা।ওর বাবা-মা কেও নেই।ছোটবেলাই মারা গেছে।সামানে এগোতে এগোতে আমার পরিচয় দিচ্ছি। আমি রাহিম আমার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ছোট একটি গ্রামে।আমি এইবার ইন্টার শেষ করসি মাত্র। ঢাকাই আছি ২ বছর যাবত।পরিবারের সবাই গ্রামেই থাকে।চায়ের দোকানে গিয়ে চা খাচ্ছি আর ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসাই চলে আসলাম।

আমার একটা খারাপ অভ্যাস ছিল প্রতিদিন বিকালে সিগারেট খাওয়া।আজও সিগারেট টা হাতে নিয়ে বেলকনিতে গেলাম কিন্তু আজ আর সিগারেট খাওয়া হলো নাহ।দেখি মেয়েটা আমার দিক তাকিয়ে আসে তারপর মুখ বিরক্ত করে চলে গেলো।তাই আমারও কেন জানি সিগারেট টা খেতে ইচ্ছে হলো নাহ।ফেলে দিয়ে চলে গেলাম রুমে। আর কি জানি ভাবতে ভাবতে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।রাত ১০ তাই দেখি মা কল দিসে তখন ঘুম থেকে উঠে মার সাথে কথা বলে খেয়ে আবার ঘুমাইলাম।

সকালে ব্রাশ করতে করতে বেলকনিতে গেলাম দেখি নিচে রাস্তাই কিছু পুলাপাইন মারামারি আর বাজে ভাষায় একে অপরকে গালি দিচ্ছে।সামনের বেলকনিতে মেয়েটা দারিয়ে বিরক্ত হচ্ছিল আর আমার দিক চেয়েই রুমে চলে গেলো।আমারও একটু খারাপ লাগছিল।রুমে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে খবর খেলাম।বিছানায় শুয়ে ভাবছিলাম মেয়েটা আমাকে দেখে এমন কেন করসে!

 সিগারেট খাওয়া টা হইতো ওর কাছে ভালো লাগে নি।তাই আমার সাথে এমন রাগ করতাসে।বিকালে বের হলাম বাসা থেকে ওকে সরি বলতে তারপর ওর বাসা সামনে গিয়ে কিছুক্ষন দারিয়ে থাকলাম ৪ টা থেকে ৫ টা বেজে গেছে কিন্তু ও আজ এখনো আসে নি। তাই ভাবলাম আজ মনে হয় বেলকনিতে আসবে না তাই চলে আসতে যাচ্ছি তখনি দেখি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে একটা কলম হাতে নিয়ে শব্দ করসে! আমি চাইতেই হাত দিয়ে ইশারা করসে। 

তখন বুঝতে পারলাম ও আমাকে ওপরে যেতে বলতাসে।আমি কেন জানি একটু তারাতারি ওপরে গেলাম।মনের মধ্যে অন্য রকম ভাব কাজ করছিল।তারপর ওর রুমে গিয়ে বিছানায় বসলাম তারপর সরি বললাম।তারপর ও একটা খাতা আর কলম নিয়ে এসে লিখে বললো আচ্ছা, সরি বলতে হবে নাহ।ও লিখল আমার নাম মেঘলা।আমি বাবা-মার সাথে ঢাকাই থাকতাম।হটাৎ একটা দুরঘটনার বাবা-মা মারা যান।বাবা-মা মারা যাওয়ার পর চাচা আমাকে তার মেয়ের মতো করে লালন পালন করেন।

কিন্তু আমার চাচি আমার সাথে ভালো ব্যবহার করতো না। তাই চাচা আমাকে এইখানে বাসা ভারা করে রেখে গেসেন। চাচা মাঝে মাঝেই আসেন আমাকে দেখতে।তারপর আমি আমার নাম বললাম।আমার গ্রামের বাড়ির কথা বললাম।আমাদের মধ্যে ভালো বন্ধুত্তের সম্পর্ক হলো।যদিও কথা বলতে পারে নাহ তাও লিখেই ওর মনের ভাব প্রকাশ করে।ওর সাথে কথা বলতে বলতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে।আমি আমার বাসাতে চলে আসলাম আজ আর সিগারেট খাওয়া হলো না।আমার ও খেতে ইচ্ছে হয় নাই।

খুব ভালো লাগছিলো তাই খেয়ে তারাতাড়ি ঘুমিয়ে পরলাম।এইভাবে ভালো দিন কাটছিল আর আমার খারাপ অভ্যাস তাও ঠিক  হয়ে গেছে।ওকে আমার ভালোই লাগছিলো।কিন্তু কখনো ওকে এটা বুঝতে দেই নি।হঠাৎ একদিন ওকে আর দেখতে পেলাম নাহ। পরের দিন শুনি ও আর নেই।সেইদিন খুব খারাপ লাগছিল আমার তাই আবার সেই সিগারেট খেলাম।২-৩ মাস কেটে গেছে ওইখানে আর কেও আসে না।আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম দেখি ওর বাসা থেকে কে যেনো ওর ওই ডাইরি ফেলে দিল।

ডাইরি টা ময়লাই একদম নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আমি হাতে নিয়ে পরিষ্কার করে ডাইরি টা খুললাম দেখি সব পাতা ইদুরে কেটে ফেলেছে আর কিছু পাতার কিছুই বুজা যাই নাহ।শুধু শেষ পাতায় একটা লেখা বোজা যাচ্ছিল।আমি কথা বলতে পারি তো কি হইসে সব কিছু তো বুজতে পারি।লোকজন তার মুখ দিয়ে কতো খারাপ কথা বলে নিজের মাতৃভাষার অপমান করে।আমি কথা বলতে পারি নাহ তাও আমার কোন দুঃখ নেই।আমি এইভাবেই ভালো আসি।আর কিছু কথা হইতো কখনো বলা হবে নাহ।থাক নাহ কিছু কথা আমি আর আমার ডাইরির মাঝে।

হাতের সিগারেট টা ফেলে ডাইরি টা নিয়ে চলতে থাকলাম......


#ছোটগল্প

#শেষপাতা


বিঃদ্রঃ ভুল তো মানুষ এ করে তাই যদি কোনো ভুল লিখে থাকি তাহলে তা ক্ষমার দৃস্টিতে দেখবেন।

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)